শুক্রবার, ১৩ মে, ২০১১

শামান সাত্ত্বিক


কলাপাতা ধোয়া রোদ

কলাপাতা ধোয়া রোদ
টুপ টুপ তার পাতা থেকে গড়িয়ে পড়ে জল
কচুপাতায় জলের শিশির টলমল
ছায়ার দীর্ঘ বসবাস
উপরে সূর্যালো নীচে ছায়ালো
শান্তিময় নিষ্করুণ চারিধার কাঁপালো
পান বরোজ সুমসাম নিষ্প্রাণ
রহস্য সুশ্মশান গৃহময়
ডুবে থেকে এতো কিছু গতর কি সয়?
ভোর হলেই কেটে যায় বিকাল
মশা মাছি মধুর গুন গুন তুলে
মশা মরে মাছি পথ করে ভুল
শূন্যে ভাসে শরীর যৌবন অতুল

যৌবন যুবতী সুঠাম শরীর সুখহীন
তুমি মাথা কুটে মরো
প্রগাঢ় দীপ্তি তুলো পরপুরুষেরে-
রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবাহ তড়ি খেলে
নারীর কমনীয়তা মিশে ধূলিময়
অহঙ্কার পতিত ক্ষুব্ধ
ঝড় উঠে হৃদয়
চেতনা নাশ।

প্রভাত শিশির ছটা ছড়ায়
জেগে উঠে আলোকিত আশিষ সাজ
নিহত নিপীড়িত নিরীহ নবান্নের নিবিড় নারী আজ।

জলান্ধে বসবাস

বুকখোলা দুপুর শীতে নেয় সে রৌদ্রের ওম
চিয়াঁপ চিয়াঁপ চিরিপ চিরিপ
মুরগীর ছা
অনন্ত দুপুর বিকেল রাতে ঘুমন্ত হা;
মানুষের মুখে উঠে চিয়াঁপ চিরিপ
মুরগীর সখ্যতা
মোরগের টকটকে ঝুটিকা লাল
অর্ধ বৃত্তাকার পুচ্ছের পালক
তুলে ডাক এলে হয়ে সোনালি সকাল।

হৃদয়হীন নদী শুকিয়ে চৌচির
এখানে সিংহ বাঘের পানাহার নেই
ধর্মের বক সমুদ্র সাঁতরায় কি?
ছুটে গেলে লঞ্চ পিছে পিছে সি-গালের
দূর হতে উড়ন্ত দূরন্ত প্রপাত
ধরনী মুগ্ধ
তার নিরীহ নীরব নিরন্নর নিরন্তর পালাবদল।

রাতে হুতুম পেঁচার ডাক
বন্যরাতে জলরাশির জোরালো সুনিপুণ আঘাত
বিছড়ে আছড়ে অথৈ থৈ জল
জলে জ্যান্ত প্রাণি প্রাণপনে খুঁজে ফেরে কাচুমাচু
ঈশ্বর হাত সবল
লৌকিক দেবতারেও সে ডাকে
মেলে ডানা উড়ে আরেক গাঙচিল
এখানে সর্পিল শ্বাপদের জলান্ধকারে কতো জানাশোনা
খসে গেলে নগ্নশরীর হতে বধূয়ার চাদর মলিন বসনখানা।

জীবকোষ জমা হতে থাকে একে একে আবদ্ধ জলে
সঙ্গম তাপিত হয়ে
মুমূর্ষুর গান হয় না শোনা উড়ন্ত প্লেন জলজ সন্ধানে
ছুঁড়ে দেয় শরীর নিভাঁজ অশুদ্ধ শুদ্ধবোধের লুকোনো প্রেমসংলাপ

প্রকৃতি হলে ক্ষুব্ধ চায় ফিরে পেতে মানুষ তার
জীর্ণ কষ্টে অর্জিত হারানো কাল
ওখানে আলোয় ভরা অন্ধকারে পড়ন্ত বিকেল পরে
আসে নাকো রাত প্রভাত সকাল। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন